সেপ্টেম্বর মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব ও পূজা-অর্চনা

প্রিয় পাঠক আপনারা কি সেপ্টেম্বর মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব ও পূজা-অর্চনা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য।
সেপ্টেম্বর মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব ও পূজা-অর্চনা
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে হিন্দুদের প্রধান উৎসব কি? এ বিষয়ে জানতে হবে সমগ্র আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

সেপ্টেম্বর মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব ও পূজা-অর্চনা

ভারতীয় এবং বাংলাদেশ এই দুই উপমহাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য সেপ্টেম্বর মাসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই সেপ্টেম্বর মাসে হিন্দু ধর্মাবলীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব ও পূজা-অর্চনার আয়োজন করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে এই উৎসবগুলো হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটায়। 
হিন্দু ধর্মাবলীদের জন্য তাদের ক্যালেন্ডার অনুসারে সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন ধরনের দেবদেবীর পূজা এবং নানা ধর্মীয় কার্যক্রম অনুষ্ঠান হয়, যা হিন্দু ধর্মপ্রাণ বর্ণ এর জীবনে বিশেষ ধরনের স্থান অধিকার করে রেখেছে। সেপ্টেম্বর মাসে পালিত উৎসবগুলোর ক্ষেত্রে ভক্তরা বিভিন্ন ধরনের দেবদেবীর উপাসনা করে এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের জীবনের 

শান্তি প্রগতি সমৃদ্ধ কামনা করে থাকে। সেপ্টেম্বর মাসের এই সব পবিত্র দিবস ও পূজা-অর্চনা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই মাসে ভক্তরা নিজেদের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জীবনকে সমৃদ্ধ করতে বিভিন্ন উপবাস, পূজা ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এই ধরনের উৎসবগুলি হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐক্য ও সংস্কৃতির সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।আসুন আমরা এক নজরে জেনে নিই ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব ও পূজা-অর্চনা সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক তথ্য।

গণেশ চতুর্থী

গণেশ চতুর্থী হলো ভগবান গণেশের জন্মতিথি। বিঘ্নহর্তা গণেশের আরাধনা ধুমধাম সহকারে গোটা দেশ এই উৎসবটি পালন করে থাকে। অর্থাৎ গণেশের জন্মদিন উপলক্ষে পালিত একটি প্রধান হিন্দু ধর্মাবলীদের উৎসব। ভগবান গণেশ হলেন মঙ্গলকারক এবং সব বাধা দূরকারী দেবতা। যাকে বহু নামের প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। 

অর্থাৎ সিদ্ধিবিনায়ক,গজানন, গণপতি ইত্যাদি।এটি সাধারণত প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে পালিত হয়। বিঘ্নহর্তা গণেশের আরাধনা ধুমধাম সহকারে ২০২৪ সালে গণেশ চতুর্থী উৎসবটি ৭ সেপ্টেম্বর এই দিনটি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সহ বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ ধুমধামের সাথে পালিত হয়। ঘরে ঘরে এবং মন্দিরে গণেশের মূর্তি স্থাপন করা হয় এবং দশদিন ধরে পূজা-অর্চনা, আরতি এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করা হয়।দশম দিনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

অনন্ত চতুর্দশী

অনন্ত চতুর্দশী হল গণেশ চতুর্থীর সমাপ্তি দিবস। অর্থাৎ ২০২৪ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর অনন্ত চতুর্দশী উৎসবটি পালন করা হয়। এই দিনটি ভগবান বিষ্ণুর অনন্ত রূপের পূজা করা হয়। ভক্তরা উপবাস পালন করেন এবং ভগবান অনন্তের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। মহারাষ্ট্র এবং গোয়ার অনেক স্থানে গণেশের মূর্তি বিসর্জন দিয়ে সমুদ্র বা নদীতে প্রবেশ করানো হয়।

এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপবাসের দিন। অর্থাৎ এই দিনটি হল বিষ্ণুর অনন্ত রূপ। অনন্ত হলেন বিষ্ণুর একটি অবতার। অনন্ত চতুর্দশীতে বিষ্ণুর পূজা করলে সহজে পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। তাই হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য বিষ্ণু পূজার মাধ্যমে ব্রত রেখে পাপ মোচনের জন্য বিশেষভাবে আরাধনা ও প্রার্থনা করা হয়। কেননা অনন্ত চতুর্দশী কে গণেশের চতুর্থীর ১০ দিন ব্যাপী উৎসব শেষে এই দিনটি চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ এই দিনে ভক্তগণ মানুষের মধ্যে জলে বিসর্জন এর মাধ্যমে বিদায় জানানো হয়।

রাধাষ্টমী

রাধা অষ্টমী হল হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ করে শ্রীমতী রাধারাণীর জন্মদিন উপলক্ষে এই পূজা উদযাপন করা হয়। রাধাষ্টমী উৎসবটি সাধারণত ভাদ্র মাসের শুক্লা অষ্টম তিথিতে পালন করা হয়ে থাকে। যা কেবলমাত্র ২০২৪ সালের জন্য ১১ সেপ্টেম্বর মাসে পালন করা হবে। অর্থাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাথে রাধার এক অনন্য প্রেম কাহিনী হিন্দু ধর্মে বিশেষ ভাবে স্থান অধিকার করে। 

তারই প্রতিরূপ ধরে এই দিনটি বিশেষভাবে মর্যাদা সহিত হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য পূজা অর্চনা মাধ্যমে পালন করা হয়ে থাকে।এই দিনটিতে ভক্তরা রাধারাণীর প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রকাশ করেন এবং মন্দিরে বিশেষ পূজা, কীর্তন এবং ভজন গাওয়ার মাধ্যমে রাধাষ্টমী উৎসবটি পালন করে থাকে।

বিশ্বকর্মা পূজা

বিশ্বকর্মা পূজা হল হিন্দু ধর্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যেখানে কেবলমাত্র কারু -কাজ হিসেবে বিশ্বকর্মাকে পূজা করা হয়। তাই প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে ১৬ তারিখে পালিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ বিশ্বকর্মাকে সমস্ত শিল্পের প্রকাশক হিসেবে সৃষ্টির দেবতা বলে মনে করা হয়। যিনি একাধারে কারকার, স্বর্ণকার, দারুশিল্পী, মৃৎশিল্পী প্রভৃতি শিল্পের এক অনন্য উৎস।

বিশ্বকর্মা পূজা হল দেবশিল্পী ভগবান বিশ্বকর্মার পূজা। কথিত আছে, বিশ্বকর্মা পুরীর বিখ্যাত জগন্নাথ মন্তী ও নির্মাণ করেছিলেন বলে তাকে স্বর্গীয় এক অনন্য সূত্র বলা হয়। তিনি দেবতাদের জন্য স্বর্গলোকের নকশা এবং নির্মাণ করেছিলেন বলে জানা যায়। এই দিনটিতে কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, অফিস এবং গৃহস্থালির কারিগরি সরঞ্জামের পূজা করা হয়। ভক্তরা ভগবান বিশ্বকর্মার কাছে তাদের কাজের সাফল্য এবং কল্যাণের প্রার্থনা করেন।

মহালয়া

মহালয়া হলো দুর্গাপূজার সূচনা পর্ব। এটি সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে অর্থাৎ ২০২৪ সালে জন্য ২৮ তারিখে পালিত হবে। অর্থাৎমহালয়ার দিন ভোরবেলা ভক্তরা মহিষাসুরমর্দিনী স্তোত্র পাঠ করেন এবং পিতৃপুরুষদের তর্পণ করেন। মহালয়ার দিন থেকে দুর্গাপূজার কাউন্টডাউন শুরু হয় এবং এর পরবর্তী সপ্তাহে দুর্গাপূজা শুরু হয়।

হিন্দুদের প্রধান উৎসব কি?

হিন্দু ধর্মে নিয়ম অনুসারে এবং তাদের ক্যালেন্ডার এর উপর ভিত্তি করে বছরে বিভিন্ন ধরনের উৎসব ও পূজা অর্চনা পালন করা হয়ে থাকে। কিন্তু হিন্দুদের প্রধান উৎসব কি এই বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে বলা খুবই কঠিন। কেননা প্রতিটি উৎসব তাদের কাছে প্রধান। তবে প্রতিটি উৎসবের কিছু নিজস্ব গুরুত্ব তাৎপর্য রয়েছে। তার ওপর ভিত্তি করে কোন উৎসব গুলোকে সর্বদা প্রধান বলা যায় না।

কেননা এসব বিষয়ের উপর নির্ভর করে কেবলমাত্র ভৌগোলিক অঞ্চল, সম্প্রদায় এবং ব্যক্তিগত বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে। আসুন আমরা এক নজরে জেনে নেই হিন্দু ধর্মের কয়েকটি প্রধান উৎসবের নাম ও কারণ। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে আসি হিন্দু ধর্মের প্রধান উৎসবগুলো কি কি?

দুর্গাপূজাঃ বাংলাদেশ এবং ভারতের উপমহাদেশ সহ পশ্চিম বাংলার বাংলা ভাষাভাষী হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। দুর্গা দেবীর পূজা করা হয় এই উৎসবে।হিন্দু ধর্মের একটি প্রধান উৎসব, যা দেবী দুর্গার পূজা উপলক্ষে পালিত হয়। এই উৎসব বিশেষত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, বিহার, ওড়িশা, এবং বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়। 

দুর্গাপূজা সাধারণত আশ্বিন মাসে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি পাঁচ দিনব্যাপী পালিত হয়, যথাক্রমে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, ও দশমী।দুর্গাপূজা দেবী দুর্গার মহিষাসুরমর্দিনী রূপের বিজয়কে উদযাপন করে। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, দেবী দুর্গা মহিষাসুর নামে এক অসুরকে বধ করেছিলেন, যে দেবতাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছিল।

দেবতাদের অনুরোধে, ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর তাদের সম্মিলিত শক্তি দ্বারা দেবী দুর্গাকে সৃষ্টি করেন এবং তাকে অসুর বধের দায়িত্ব দেন।দুর্গাপূজার সময় দেবী দুর্গার মূর্তি স্থাপন করা হয়, এবং মন্দির ও মণ্ডপে তার আরাধনা করা হয়। প্রতিদিনই দেবীর পূজা, আরতি, এবং ভোগ নিবেদন করা হয়। অষ্টমী তিথিতে কুমারী পূজা এবং সন্ধি পূজা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

নবমী তিথিতে দেবীর বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দশমী তিথিতে দেবীর বিসর্জন দেওয়া হয়, যা বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। এই দিনটিতে প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয় এবং পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
গণেশ চতুর্থীঃ গণেশ চতুর্থী হলো হিন্দু ধর্মের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যা ভগবান গণেশের জন্মোৎসব হিসেবে পালিত হয়। গণেশ হলেন জ্ঞান, সমৃদ্ধি, এবং সৌভাগ্যের দেবতা এবং তাঁকে বিঘ্নহর্তা বা সমস্ত বিঘ্ন অপসারণকারী হিসেবে পূজা করা হয়। এই উৎসবটি বিশেষত ভারতের মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, এবং গোয়াতে

অত্যন্ত ধুমধামের সাথে পালিত হয়। গণেশ চতুর্থী ভাদ্র মাসের (আগস্ট-সেপ্টেম্বর) চতুর্থী তিথিতে পালিত হয় এবং দশ দিনব্যাপী চলে।গণেশ চতুর্থীর পেছনের প্রধান কাহিনীটি হলো দেবী পার্বতী এবং ভগবান শিবের পুত্র গণেশের জন্ম। কাহিনী অনুযায়ী, দেবী পার্বতী তাঁর শয়নকক্ষের দরজায় রক্ষক হিসেবে গণেশকে সৃষ্টি করেন এবং শিবের অব্যর্থ অনুগ্রহে

গণেশ নতুন জীবন লাভ করেন। এই দিনটি গণেশের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়।গণেশ চতুর্থী একটি আধ্যাত্মিক এবং আনন্দময় উৎসব, যা ভগবান গণেশের প্রতি ভক্তি, বিশ্বাস এবং ভালোবাসার প্রতীক। এই উৎসব আমাদের শেখায় যে, সকল বাধা এবং বিঘ্ন অপসারণের জন্য দৃঢ় বিশ্বাস এবং অনুশীলন প্রয়োজন। গণেশ চতুর্থী আমাদের জীবনে নতুন প্রেরণা ও উৎসাহ এনে দেয় এবং আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ ও সৌভাগ্যশালী করে তোলে।

হোলিঃ হলো হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব, যা আনন্দ ও রঙের মেলবন্ধন হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। এই উৎসবটি বিশেষভাবে ভারত এবং নেপালে পালিত হয়, তবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যেও উদযাপিত হয়। হোলি বসন্ত ঋতুর আগমনের প্রতীক এবং ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয়, যা সাধারণত মার্চ মাসে পড়ে।

হোলি উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হলো রঙ খেলা। উৎসবের দিন, মানুষজন একে অপরকে রঙ মাখায়, গুলাল বা আবির ছিটায়, এবং পানির সঙ্গে খেলাধুলা করে। এ সময় গান-বাজনা, নাচ, এবং মিষ্টি বিতরণ করা হয়। বিশেষ করে হোলির দিন 'ভাং' নামে একটি বিশেষ পানীয় গ্রহণ করা হয়, যা উৎসবের মেজাজ আরও উজ্জীবিত করে।হোলি একটি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উৎসব,

যা সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে একত্রিত করে। এই দিনে মানুষ সকল প্রকার ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের সাথে মিলে-মিশে আনন্দ করে। হোলি সামাজিক সম্প্রীতির উৎসব এবং মানুষকে একে অপরের সাথে ভালোবাসা এবং বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে।হোলি কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি আনন্দ, উদ্দীপনা, এবং সৃজনশীলতার প্রতীক। 

এটি রঙের মাধ্যমে জীবনের উজ্জ্বলতা ও জীবনীশক্তিকে উদযাপন করে। হোলি আমাদের শেখায় যে, জীবনে রঙিন মুহূর্তগুলি উপভোগ করতে হবে এবং সমস্ত বিরোধ ভুলে জীবনে আনন্দ খুঁজে নিতে হবে। এই উৎসব আমাদের সকলকে ভালোবাসা, আনন্দ, এবং সম্প্রীতির বার্তা দেয়।
দীপাবলিঃ দীপাবলি, যা দিওয়ালি নামেও পরিচিত, হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান এবং জনপ্রিয় উৎসব। এটি আলোর উৎসব হিসেবে খ্যাত, যা প্রতিটি ঘরকে আলোয় আলোকিত করে এবং অন্ধকারকে দূর করে দেয়। দীপাবলি হিন্দু পঞ্চাঙ্গের কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে পালিত হয়, যা সাধারণত অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে পড়ে।

দীপাবলির সঙ্গে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী জড়িত। সবচেয়ে বিখ্যাত কাহিনীটি হলো ভগবান শ্রী রামের অযোধ্যা প্রত্যাবর্তনের কাহিনী। কাহিনী অনুযায়ী, রাম, সীতা এবং লক্ষ্মণ ১৪ বছরের বনবাস শেষে অযোধ্যায় ফিরে এলে শহরের লোকেরা তাদের অভ্যর্থনার জন্য প্রদীপ জ্বালিয়ে পুরো নগরীকে আলোকিত করে তোলে। এছাড়া, দীপাবলি লক্ষ্মী পূজার জন্যও বিখ্যাত, যা সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের দেবী লক্ষ্মীর পূজা উপলক্ষে পালিত হয়।দীপাবলি 

সাধারণত পাঁচ দিনব্যাপী পালিত হয় এবং প্রতিটি দিন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথম দিন ধন তেরাস, দ্বিতীয় দিন নারক চতুর্দশী বা ছোট দীপাবলি, তৃতীয় দিন প্রধান দীপাবলি, চতুর্থ দিন গোবর্ধন পূজা, এবং পঞ্চম দিন ভাই দুজ। দীপাবলির দিন বাড়ি পরিষ্কার করা হয়, প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বালিয়ে ঘর সাজানো হয়, এবং আতশবাজি ফোটানো হয়।প্রধান দীপাবলির দিন দেবী

 লক্ষ্মীর পূজা করা হয় এবং তাঁর আশীর্বাদ প্রার্থনা করা হয়। এই দিন মানুষজন একে অপরের ঘরে মিষ্টি এবং উপহার বিনিময় করেন, যা সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির প্রতীক।দীপাবলি আলোর প্রতীক, যা অন্ধকারকে দূর করে এবং জীবনে জ্ঞান, শান্তি, সমৃদ্ধি, এবং সৌভাগ্য নিয়ে আসে। এই উৎসব আমাদের শেখায় যে, আলোর শক্তি অন্ধকারকে পরাজিত করে এবং ভালো শক্তি

 খারাপের ওপর বিজয়ী হয়। দীপাবলি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, জীবনের সকল প্রতিকূলতার মধ্যে আলো এবং আশা খুঁজে নিতে হবে। এই উৎসব সকলকে সুখ, শান্তি, এবং সমৃদ্ধি এনে দিক - এই শুভকামনা থাকলো দীপাবলির শুভ মুহূর্তে।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং সেপ্টেম্বর মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব ও পূজা-অর্চনা সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয়বস্তু ও তথ্যসমূহ জেনেছেন। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সেপ্টেম্বর মাসের উৎসব ও পূজা অর্জনের সম্পর্কে জেনে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে, আপনার বন্ধুবান্ধব কিংবা প্রতিবেশীদের সাথে এই বিষয়ে বেশি বেশি শেয়ার করবেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এরোস বিডি ব্লগ ওয়েবসাইট নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url