ডেঙ্গু জ্বরের চুলকানি থেকে মুক্তির উপায়

পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা হলে করণীয়প্রিয় পাঠক আপনি কি ডেঙ্গু জ্বরের চুলকানি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। ডেঙ্গু হলে কতটুকু পানি পান করা উচিত জানতে হলে সমগ্র আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ডেঙ্গু জ্বরের চুলকানি থেকে মুক্তির উপায়
পোস্ট সূচিপত্রঃএই আর্টিকেলটিতে আমরা ডেঙ্গু জ্বরের চুলকানি থেকে মুক্তির কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো।

ডেঙ্গু জ্বরের চুলকানি থেকে মুক্তির উপায়

ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এটি প্রধানত উষ্ণমণ্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। ডেঙ্গু জ্বরের কারণে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশী এবং সন্ধির ব্যথা, এবং ত্বকে ফুসকুড়ি হতে পারে।ডেঙ্গু জ্বরের সাথে আসা চুলকানি রোগীর জন্য যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এতে করে রোগের শারীরিক মানসিকভাবে
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা জড়িত লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে। তাই আজকের এই আর্টিকেলটিতে, আমরা ডেঙ্গু জ্বরের চুলকানি থেকে মুক্তির কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করি।
ঘরোয়া উপায়
  • ঠান্ডা সেকঃ একটি পরিষ্কার তোয়ালে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে চুলকানিযুক্ত ত্বকে সেক করুন। এটি ত্বককে শান্ত করে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।
  • অ্যালোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা জেল ত্বকে শান্তি প্রদান করে এবং প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। ডেঙ্গু জ্বরের চুলকানির জন্য এটি একটি কার্যকর প্রতিকার হতে পারে।
  • নারকেল তেলঃ নারকেল তেল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং চুলকানি প্রশমিত করতে সহায়তা করে।
  • ওটমিল স্নানঃ ওটমিল স্নান ত্বককে শান্ত করতে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। একটি পাতলা ওটমিলের স্নান তৈরি করতে একটি পরিমাণ ওটমিল গরম পানিতে মিশিয়ে নিন।
  • পোশাকঃ ঢিলেঢালা, সুতির পোশাক পরুন যাতে ঘাম ঝরতে সুবিধা হয়। এটি ত্বককে শীতল রাখতে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করবে।
চিকিৎসা
  • অ্যান্টিহিস্টামাইনঃ অ্যান্টিহিস্টামাইন ওষুধ চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • লোশনঃ ক্যালামাইন লোশন বা অন্যান্য অ্যান্টি-ইচ লোশন ব্যবহার করতে পারেন।
  • সাবধানতাঃ ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসার জন্য কোনও ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
তবে মনে রাখবেন ডেঙ্গু জ্বর একটি গুরুতর ভাইরাসজনিত রোগ যা সঠিকভাবে প্রতিরোধ ও চিকিৎসা করা প্রয়োজন। মশার কামড় থেকে সুরক্ষা এবং মশার প্রজনন স্থান ধ্বংস করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা যায়। ডেঙ্গুর লক্ষণগুলি দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ডেঙ্গু হলে কি এন্টিবায়োটিক খাওয়া যায়

বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু একটি মরণব্যাধি ভাইরাস জনিত রোগ। অর্থাৎ ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে হয় এবং এটি এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণ হলে এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করা সাধারণত প্রয়োজন হয় না। কারণ, এন্টিবায়োটিকগুলি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর, কিন্তু ভাইরাসের
বিরুদ্ধে কার্যকর নয়। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ হওয়ায় এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করে কোনো উপকার পাওয়া যায় না। বরং ডেঙ্গু হলে এন্টিবায়োটিক খাওয়ার পরিবর্তে নিম্নের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করলে, আপনি ডেঙ্গু জ্বর থেকে নিরাময় পেতে পারেন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
  • শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্রাম শরীরকে শক্তি পুনরুদ্ধার করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
পর্যাপ্ত পানি পান
  • ডেঙ্গুর সময় শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়, তাই পর্যাপ্ত পানি পান করে শরীরকে হাইড্রেট রাখা অত্যন্ত জরুরি।
প্যারাসিটামল
  • জ্বর কমাতে এবং ব্যথা প্রশমিত করতে প্যারাসিটামল সাধারণত ব্যবহৃত হয়। তবে এন্টিবায়োটিকের মতো শক্তিশালী ব্যথানাশক যেমন আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসপিরিন এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলি ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
  • পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। হালকা এবং সহজপাচ্য খাবার যেমন ফলমূল, শাকসবজি, এবং তরল খাবার গ্রহণ করা উচিত।
ডাক্তারের পরামর্শ
  • ডেঙ্গুর লক্ষণগুলি গুরুতর হলে এবং অবস্থা খারাপ হলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও, ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে রক্তের প্লেটলেট সংখ্যা কমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্লেটলেট সংখ্যা নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরি, এবং গুরুতর পরিস্থিতিতে হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন।
মনে রাখবেন
  • ডেঙ্গু জ্বর হলে এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ এবং এন্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ক্ষেত্রে কার্যকর। ডেঙ্গুর চিকিৎসায় উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে এবং ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে সুস্থ হওয়া সম্ভব।

ডেঙ্গু জ্বরের জন্য কোন ঔষধ ভালো

ডেঙ্গু জ্বরের কোন নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। তবে ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসার প্রধান লক্ষণ হল রোগীর উপসর্গ গুলো নিয়ন্ত্রণ করা এবং জটিলতা এড়ানো। অর্থাৎ সমস্যায় যতই জটিল বা কঠিন হোক না কেন তার সমাধান ও নিরাময় অবশ্যই রয়েছ।তবে কিছু নিয়ম মেনে ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ গুলো নিয়ন্ত্রণ ও নিরাময় করা সম্ভব হতে পারে। বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু ভাইরাসের

কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা প্রতিষেধক নেই, তাই চিকিৎসা মূলত লক্ষণ ভিত্তিক এবং সহায়ক। আপনি যদি ডেঙ্গু জ্বরের জন্য আইবুপ্রোফেন এবং অ্যাসপিরিন এই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেন ,তাহলে ডেঙ্গু জ্বর নিরাময় হওয়ার পরিবর্তে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ এই ঔষধগুলি রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে তাই সর্বদা এই ধরনের ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

ডেঙ্গু হলে কতটুকু পানি পান করা উচিত

বলা হয়ে থাকে পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু এ কথাটি সম্পূর্ণভাবে পরিপূর্ণ নয়। কেননা বর্তমান সময়ে এর প্রবাদ বাক্যটি পরিবর্তন হয়েছে। অর্থাৎ নিরাপদ পানির অপর নাম জীবন। ডেঙ্গু জ্বর হলে রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কেননা ডেঙ্গু জ্বরের সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে তরল বের হয়ে যায়। ডেঙ্গু জ্বর হলে 

পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গু জ্বরের সময় পর্যাপ্ত পানি এবং অন্যান্য তরল গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার এবং শিশুদের জন্য ১.৫ থেকে ২ লিটার পানি পান করা উচিত। যদি ডায়রিয়া বা বমি হয়, তাহলে তরলের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। এর পাশাপাশি, ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন, ফলের রস, সুপ, এবং নারিকেলের পানি গ্রহণ করা উচিত। পর্যাপ্ত পানি পানের মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বরের সময় শরীরের তরল ভারসাম্য রক্ষা করা এবং দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি সহজে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, কিভাবে আপনি খুব সহজে ডেঙ্গু জ্বরের চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তবে এই পোস্টে উল্লেখিত ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো নিরাময় হওয়ার পদক্ষেপ যদি অনুসরণ করেন, তাহলে অবশ্যই উপকৃত হবেন। আর এই জন্য ডাক্তারের পরামর্শ চিকিৎসা গ্রহণ করা এবং আপনার প্রচুর ধৈর্য ও সতর্ক থাকা একান্ত প্রয়োজন। এই পোস্টের কোন তথ্য যদি আপনার বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন আর এই পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে বেশি বেশি শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এরোস বিডি ব্লগ ওয়েবসাইট নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url