বাবা দিবস কবে ২০২৪?
জীবনে প্রতিটি মানুষের পথ ধাবিত করার জন্য একজন পথ প্রদর্শকের প্রয়োজন হয়। আর সেই পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে থাকেন আমাদের প্রিয় বাবা। প্রিয় পাঠক আপনি কি বাবা দিবস কবে ২০২৪? সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
পোস্ট সূচিপত্রঃআজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব বাবা দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে হলে সমগ্র আর্টিকেলটিতে চোখ রাখুন।
বাবা দিবস কবে ২০২৪?
জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে পথ দেখানো, স্নেহ দিয়ে সর্বদা আগলে রাখা, প্রতিনিয়ত অক্লান্ত পরিশ্রম ও ভালোবাসা দিয়ে সন্তানের সুখের জন্য নিরন্তর সংগ্রামী একজন বাবার ভূমিকা কতই না মহান। সন্তানের জীবনে একজন বাবার ভূমিকা অপরিসীম। তিনি শুধুমাত্র পিতৃত্বের সূচনা নন, বরং সঙ্গী, শিক্ষক, অনুপ্রেরণা, এবং অটুট সমর্থনের প্রতীক।
তিনি শুধু আমাদের জন্মদাতা নন, বরং আমাদের জীবনের প্রতিটি ধাপে স্নেহ, ত্যাগ ও অনুপ্রেরণার অমূল্য ধারা। তাই প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার অর্থাৎ ১৬ জুন আমরা উদযাপন করি বাবা দিবস।
বাবা দিবসের ইতিহাস
বাবা দিবস উদযাপনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বেশ দীর্ঘ এবং হৃদয়গ্রাহী। ১৯০৯ সালে আমেরিকার ওয়াশিংটন রাজ্যের সোনারা স্মার্ট ডড সর্বপ্রথম এই দিনটি যথাযথ মর্যাদার সহকারে উদযাপনের উদ্যোগ নেন। সোনোরা স্মার্ট ডড নামে একজন মহিলা তার পিতা উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্টের স্মরণে এই দিনটি উদযাপন করার জন্য উদ্যোগী হন।
উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্ট ছিলেন একজন সৈনিক এবং ছয় সন্তানের জনক। তিনি গৃহযুদ্ধে সাহসীভাবে লড়াই করেছিলেন এবং তার সন্তানদের লালন-পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি তার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে এই দিনটি পালনের প্রস্তাব করেন। তিনি তার বাবার মৃত্যুর পর একাই তাকে ও তার ভাই-বোনদের লালন-পালন করেছিলেন।
১৯১০ সালের ১৯ জুন স্পোকেন শহরে প্রথম বাবা দিবস উদযাপিত হয়। এরপর এই দিনটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পায় এবং ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এটি জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।
বাবা দিবসের তাৎপর্য
বাবা দিবস শুধুমাত্র একটি উদযাপন উৎসব নয় বরংএটি আমাদের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে মূল্যবান। বাবাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি অনন্য সুবর্ণ সুযোগ হল বাবা দিবস। আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত পদে পদে বাবার ভূমিকা অপরিসীম। তিনি আমাদের প্রেরণা, আমাদের রক্ষক এবং আমাদের
সামনে পথ চলার পথপ্রদর্শক। বাবার ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ও নিরন্তন। অর্থাৎ বাবার ভালোবাসার কৃতিত্ব যেকোনো দাড়িপাল্লা বা মাপকাঠি দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় না। প্রতিটি বাবা তার সন্তানকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দিয়ে এ সুন্দর পৃথিবীর বুকে ধীরে ধীরে লালন-পালন করে বড় করে তোলে। সর্বদা যেকোনো ধরনের বিপদ ও আপদ থেকে আগলে রাখে।
নিজে না খেয়ে সন্তানের মুখে অন্য তুলে দেওয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে। তাই প্রতি বছর বাবাদের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানানো এবং নিজেকে বাবার প্রতি মূল্যায়ন করার জন্য বাবা দিবস পালন করা হয়ে থাকে।এই দিনটি তাদের সেই ভালোবাসার মূল্যায়ন করার একটি মাধ্যম।
বাবা দিবস উদযাপন
বাবা দিবসের উদযাপন ব্যক্তিগত ও সামাজিক উভয় পর্যায়েই ঘটে। পরিবারগুলো এদিন বাবাদের বিশেষভাবে সম্মানিত করে, যেমন বিশেষ উপহার দেওয়া, বাবাকে নিয়ে ভ্রমণে যাওয়া বা তার প্রিয় খাবার রান্না করা। সন্তানরা তাদের বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে, তাকে ধন্যবাদ জানায় এবং তার প্রতি তাদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
অনেক প্রতিষ্ঠান এবং স্কুলেও বাবা দিবস উদযাপন করা হয়। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা ও বিশেষ কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। শিশুদের জন্যও এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা এই দিনটির মাধ্যমে তাদের বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের গুরুত্ব শিখে।
বাংলাদেশে বাবা দিবস কীভাবে পালিত হয়
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস পালিত না হলেও, 'বাবা দিবস' ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। শহুরে এলাকায়, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সংগঠন এই দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। যথাযথ মর্যাদা গৌরব সহকারে প্রতিবছর এই দিনটি ১৬ জুন পালিত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে বাবা দিবসের তাৎপর্য প্রতিপাদ্য বিষয় হলো প্রত্যেক বাবার প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। তারই হাত ধরে প্রত্যেক সন্তানের উচিত তাদের বাবাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপহার কিনে এবং তাদের সাথে সময় কাটায় ও সর্বদা ভালোবাসার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। প্রত্যেক সন্তানের জন্য বাবা দিবসের বাবা হল জীবনের প্রথম
শিক্ষক, পথপ্রদর্শক ও অভিভাবক। তাদের ত্যাগ, পরিশ্রম ও স্নেহের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। বাবা দিবস আমাদের সকলকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশ করার সুযোগ করে দেয়। এই বিশেষ দিনে আসুন আমরা সকলেই আমাদের প্রিয় বাবাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানাই।
লেখকের শেষ কথা
বাবা দিবস আমাদের জীবনকে আরও সুন্দর ও অর্থবহ করে তোলে, কারণ এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে বাবার ভালোবাসা ও সমর্থন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৪ সালের বাবা দিবস উদযাপন করি এমনভাবে, যাতে আমাদের বাবারা অনুভব করতে পারেন যে আমরা তাদের কতটা ভালোবাসি ও শ্রদ্ধা করি।
এই দিনটি হোক আমাদের বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের এক অনন্য দিন। প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি বাবা দিবসের ইতিহাস ও সঠিক তাৎপর্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে উপকৃত হন এবং বাবার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাবা দিবসে বাবার প্রতি মর্যাদা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা সকলের একান্ত কাম্য। আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এরোস বিডি ব্লগ ওয়েবসাইট নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url