বাংলাদেশী নতুন ই-পাসপোর্ট কিভাবে আবেদন করবেন

 অনলাইনে অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়মপ্রিয় পাঠক আপনি কি বাংলাদেশী নতুন ই-পাসপোর্ট কিভাবে আবেদন করবেন এ বিষয়ে নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন? তাহলে আপনাদের চিন্তার সমস্যার সমাধানের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য।
বাংলাদেশী নতুন ই-পাসপোর্ট কিভাবে আবেদন করবেন
পোস্ট সূচিপত্রঃতাহলে আজকের এই লেখায় নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য ফি এবং কিভাবে আবেদন করবেন তার সঠিক তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।

বাংলাদেশী নতুন ই-পাসপোর্টে কিভাবে আবেদন করবেন

বিশ্বব্যাপী যাতায়াত ব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও আধুনিক ভ্রমণ দলিল অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এই চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে, বাংলাদেশ সরকার ২০২০ সালে 'ই-পাসপোর্ট' চালু করে। এই লেখায়, আমরা আপনাদের নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন

প্রক্রিয়া সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেট সহ ধাপে ধাপে নির্দেশিকা প্রদান করবো। বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই বছরের রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠানে ই-পাসপোর্ট বিতরণের উদ্বোধন করেন। ২০১৬ সালে ২৪ এপ্রিল প্রথমবারের মতো ই-পাসপোর্ট প্রবর্তনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই জার্মানির প্রতিষ্ঠান ভেরিডোসের সাথে চুক্তি করে বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। ২০২১ সালের মধ্যে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ই-পাসপোর্ট চালু করার কথা ছিল।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) / জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC) (মূল ও ফটোকপি)
  • পাসপোর্ট আবেদন ফরম (온라ইনে পূরণ করা)
  • পাসপোর্ট ফি (মোবাইল ব্যাংকিং/ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে প্রদান করা)
  • ২ কপি সাদা পটভূমির পাসপোর্ট আকারের ছবি (ইলেকট্রনিক ফরম্যাটে)
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ (অতি জরুরী আবেদনের ক্ষেত্রে)
আবেদন প্রক্রিয়া
 অনলাইন রেজিস্ট্রেশনঃ
  • প্রথমে, বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অনলাইন পোর্টাল (https://www.epassport.gov.bd/) এ যান।
  • নতুন আবেদন' বিকল্পে ক্লিক করে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
  • গুরুত্বপূর্ণঃ রেজিস্ট্রেশনের সময়, আপনার মোবাইল নম্বর এবং ইমেইল ঠিকানা সঠিকভাবে প্রদান করুন কারণ এই মাধ্যমেই আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো হবে।
  • প্রয়োজনীয় তথ্য সাবধানে পূরণ করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।
ফরম পূরণঃ
  • লগ ইন করার পর, 'আবেদন ফরম' ট্যাবে যান।
  • গুরুত্বপূর্ণঃ সকল তথ্য বাংলায় সাবধানে পূরণ করুন। তথ্যে ভুল থাকলে আপনার আবেদন বাতিল হতে পারে।
  • পাসপোর্টের ধরণ (নতুন/নবায়ন/প্রতিস্থাপন), বৈধতা (৫/১০ বছর) এবং ডেলিভারি পদ্ধতি (সাধারণ/অতি জরুরী) নির্বাচন করুন।
 ফি প্রদানঃ
  • নির্বাচিত পদ্ধতি অনুযায়ী প্রযোজ্য ফি মোবাইল ব্যাংকিং / ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড এর মাধ্যমে প্রদান করুন।
  • গুরুত্বপূর্ণঃ ফি প্রদানের পর রসিদ সংরক্ষণ করুন।
 appointment শেডিউলঃ
  • নিকটতম পাসপোর্ট অফিসে একটি appointment শেডিউল করুন।
  • appointment তারিখ ও সময় নিশ্চিত করুন।

নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য ফি

আধুনিক যুগে, বিশ্ব ভ্রমণ একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এই চাহিদা পূরণের জন্য, বাংলাদেশ সরকার২০২০ সালে 'ই-পাসপোর্ট' চালু করে। নতুন ই-পাসপোর্ট কেবল উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য প্রদান করে না, বরং আবেদন প্রক্রিয়াও সহজ করে তোলে। এই লেখায়, আমরা নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন ফি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করবো। নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য ফি নির্ভর করে পাসপোর্টের মেয়াদ এবং পাতার সংখ্যার উপর। নিম্নরূপ টেবিলটি বিভিন্ন বিভাগের জন্য প্রযোজ্য ফি তালিকাভুক্ত করে
মেয়াদঃ
  • ৫ বছর
  • ১০ বছর
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ
  • ৪৮
  • ৬৪
সেবাঃ
  • রেগুলার
  • জরুরী
  • অতি জরুরী
  • এই তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে পাসপোর্টের খরচ নির্ধারিত হয়।
নিচে একটি সারণী দেওয়া হলো যাতে বিভিন্ন ধরণের পাসপোর্টের জন্য খরচ দেওয়া হলো:

মেয়াদ পৃষ্ঠা সংখ্যা সেবা টাকার পরিমান

 ৫ বছর 

 ৪৮ 

 রেগুলার

 ৪০২৫

 ৫ বছর 

 ৪৮ 

 জরুরী

 ৬৩২৫

 ৫ বছর 

 ৪৮ 

অতি জরুরী

  ৮৬২৫

 ৫ বছর 

 ৬৪  

 রেগুলার

 ৬৩২৫

 ৫ বছর 

 ৬৪ 

  জরুরী

 ৮৬২৫

 ৫ বছর 

 ৬৪ 

অতি জরুরী

 ১২০৭৫

 ১০ বছর 

 ৪৮

 রেগুলার

 ৫৭৫০ 

 ১০ বছর 

 ৪৮

   জরুরী

 ৮০৫০

 ১০ বছর 

 ৪৮

অতি জরুরী

 ১০৩৫০

 ১০ বছর 

  ৬৪

 রেগুলার

 ৭০৭৫

 ১০ বছর 

  ৬৪

  জরুরী

 ৯৩৭৫

 ১০ বছর 

  ৬৪

অতি জরুরী

 ১১৬৭৫

অতিরিক্ত খরচ
  • স্মার্টকার্ড ফিঃ ৭৫০ টাকা
  • ডেলিভারি চার্জ (ঐচ্ছিক)
  • ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরঃ ৩৫০ টাকা
  • অন্যান্য জেলাঃ ৫০০ টাকা
মোট খরচঃ
  • আপনার পছন্দের মেয়াদ, পৃষ্ঠা সংখ্যা এবং ডেলিভারি পছন্দের উপর নির্ভর করে মোট খরচ পরিবর্তিত হবে।
  • উপরে উল্লিখিত ফি VAT ছাড়া।
  • অনলাইনে আবেদন করলে 50 টাকা ডিজিটাল সেবা চার্জ প্রযোজ্য।
  • ব্যাংক কমিশন ও মোবাইল পেমেন্ট গেটওয়ে চার্জ আলাদাভাবে প্রযোজ্য।
নির্ধারিত সময়ঃ
নতুন ই-পাসপোর্ট তৈরির নির্ধারিত সময় নিম্নরূপঃ
  • রেগুলারঃ ২১ কর্মদিবস
  • জরুরিঃ ৭ কর্মদিবস
  • অতি জরুরিঃ ২ কর্মদিবস
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বমনে রাখবেনঃ
  • কর্মদিবস বাদে শুক্রবার, শনিবার, রবিবার ও সরকারি ছুটির দিন বাদে গণনা করা হয়।
  • আবেদন গ্রহণের পর যদি কোন ত্রুটি থাকে, তাহলে সময় বেশি লাগতে পারে।
আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুনঃ
  • ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইট: https://www.epassport.gov.bd/
  • ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর: https://dip.gov.bd/

ই-পাসপোর্টের সুবিধা সমূহ

বিশ্বায়নের এই যুগে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ক্রমশ সহজ ও সুবিধাজনক হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ সরকারও এই প্রবণতা অনুসরণ করে ২০২০ সালে ই-পাসপোর্ট চালু করে। ই-পাসপোর্ট হলো একটি ইলেকট্রনিক চিপযুক্ত পাসপোর্ট যাতে পাসপোর্টধারীর জৈব তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এটি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এর উন্নত সংস্করণ। ই-পাসপোর্ট কেবল উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য প্রদান করে না, বরং এটি ভ্রমণকারীদের জন্য বেশ কিছু সুবিধাও প্রদান করে।
দ্রুত ও সহজ ভ্রমণঃ
  • ই-পাসপোর্টে ইলেকট্রনিক চিপ থাকে যাতে পাসপোর্টধারীর জৈব তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
  • এটি ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াটিকে দ্রুততর করে তোলে কারণ কর্তৃপক্ষ দ্রুত ও সহজেই পাসপোর্ট যাচাই করতে পারে।
  • বিমানবন্দরে ই-গেট ব্যবহার করে দ্রুত প্রবেশ ও প্রস্থানের সুযোগ।
বর্ধিত নিরাপত্তাঃ
  • ই-পাসপোর্ট জালিয়াতি ও পরিবর্তনের বিরুদ্ধে উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সহ আসে।
  • ইলেকট্রনিক চিপে সংরক্ষিত তথ্য এনক্রিপ্ট করা থাকে, যা অননুমোদিত অ্যাক্সেস প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • পাসপোর্টের প্রতিটি স্পর্শে পরিবর্তন সনাক্ত করা যায়।
দীর্ঘ মেয়াদঃ
  • এমআরপি-এর ৫ বছরের মেয়াদের তুলনায় ই-পাসপোর্ট ১০বছরের জন্য বৈধ।
  • বারবার পাসপোর্ট নবায়নের ঝামেলা কমায়।
 আরও বেশি তথ্যঃ
  • ই-পাসপোর্টে পাসপোর্টধারীর ছবি, আঙুলের ছাপ এবং চোখের আইরিস স্ক্যান সহ আরও বেশি তথ্য থাকে।
  • এটি পাসপোর্টধারীর পরিচয় যাচাই করতে এবং জালিয়াতি রোধ করতে সহায়তা করে।
 ভিসা প্রক্রিয়া সহজতরঃ
  • অনেক দেশ ই-পাসপোর্টধারীদের জন্য আগমন ভিসা সুবিধা প্রদান করে।
  • অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করা এবং অনুমোদন পাওয়া সহজতর হতে পারে।
 অন্যান্য সুবিধাঃ 
  • ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে কিছু দেশে সীমান্ত পার হওয়া সহজ।
  • কিছু অনলাইন পরিষেবা এবং সুযোগ-সুবিধার জন্য ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশী ভ্রমণকারীদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা প্রদান করে। দ্রুত ও সহজ ভ্রমণ, বর্ধিত নিরাপত্তা, দীর্ঘ মেয়াদ এবং আরও অনেক কিছুর জন্য এটি একটি আকর্ষণীয় বিকল্প। আপনি যদি বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন, তাহলে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার কথা বিবেচনা করুন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখবেনঃ
  • ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার আগে, নির্ধারিত ফি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিন।
  • আপনার আবেদন জমা দেওয়ার আগে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে যাচাই করুন।

শেষ কথা

বিশ্বব্যাপী যাতায়াতের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও আধুনিক ভ্রমণ দলিল অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। প্রিয় পাঠক এই লেখায়, আমরা আপনাদের নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেট সহ ধাপে ধাপে নির্দেশিকা প্রদান করেছি। আমরা আশা করি এই তথ্য আপনাদের নতুন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে সহায়তা করবে। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে, এই বিষয় সম্পর্কে আপনার পরিচিত কিংবা আত্মীয় স্বজনদের সাথে বেশি বেশি শেয়ার করবেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এরোস বিডি ব্লগ ওয়েবসাইট নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url