দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায়
কোন কোন খাদ্যে ভিটামিন ডি আছেপ্রিয় পাঠক আপনি কি দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে
চাচ্ছেন? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি
ফুলে যায়, জানতে হলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সবগুলো পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃদাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায় সঠিক তথ্য জানতে হলে নিচের তথ্যগুলো
সম্পন্ন অনুসরণ করুন।
দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায়
দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, বর্তমান সময়ে প্রায় অনেক
মানুষেরই দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেনা। যার
জন্য দাঁতের মাড়ি ফোলা ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে না জানার কারণে তারা
বিভিন্নভাবে দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা জনিত সমস্যা কারনে ভোগে থাকে। তাই আজকের
আর্টিকেলটি
আরো পড়ুনঃ দাঁতের পোকা দূর করার ঘরোয়া উপায়
সমস্ত জুড়ে থাকছে দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিভিন্ন
পদ্ধতি। দাঁতের মাড়ি ফোলা জন্য বিভিন্ন কারণে হতে পারে। চলুন আমরা এক নজরে জেনে
আসি দাদের বাড়ি ফল আর ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সমূহ।
- নুন জল: দিনে তিনবার লবণাক্ত পানিতে কুলকুচি করলে মাড়ির ফোলা ও ব্যথা কমতে সাহায্য করে।
- হলুদ: হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ মাড়ির ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এক চা চামচ হলুদের গুঁড়োর সাথে অল্প পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাড়িতে লাগান।
- অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরার জেল মাড়িতে লাগালে ব্যথা ও ফোলাভাব কমে।
- তুলসি: তুলসি পাতা ধুয়ে জ্বাল দিয়ে পানি বানিয়ে কুলকুচি করলে মাড়ির জ্বালা ও ব্যথা কমে।
- লবঙ্গ: লবঙ্গ তেল মাড়িতে লাগালে ব্যথা কমে।
- আইস প্যাক: আইস প্যাক দিয়ে মাড়িতে সেঁক দিলে ফোলাভাব কমে।
চিকিৎসা
- মাড়ির পরিষ্কার: নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা এবং ফ্লস করা জরুরি।
- ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া: মাড়ির ফোলা ও ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া উচিত। ডেন্টিস্ট মাড়ি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেবেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- ধূমপান বন্ধ করুন: ধূমপান মাড়ির সমস্যা বৃদ্ধি করে।
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান: ভিটামিন সি মাড়ির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম করলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়, যা মাড়ির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
আরো কিছু অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- মাড়ি ব্রাশ করার সময় খেয়াল রাখুন: মাড়ি ব্রাশ করার সময় খুব বেশি জোরে ব্রাশ করবেন না।
- ফ্লস ব্যবহার করুন: নিয়মিত ফ্লস ব্যবহার করে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবার বের করে ফেলুন।
- মাড়ির ম্যাসাজ করুন: নিয়মিত মাড়ির ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং মাড়ি সুস্থ থাকে।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে মুখের ভেতর আর্দ্র থাকে এবং মাড়ি শুষ্ক হতে পারে না।
কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়
কোন কোন ভিটামিনের অভাবে আমাদের দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় এ বিষয়ে সম্পর্কে আমাদের
যদি সঠিক তথ্য জানা থাকে তাহলে আমরা খুব সহজে দাঁতের মাড়ি কোন ভিটামিনের অভাবে
ফুলে যায় তা জানতে পারবো। তাহলে কোন কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়
নিম্নলিখিত অংশে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। এই সমস্ত সঠিক তথ্য পেয়ে আপনি
উপকৃত হতে পারবেন।
ভিটামিন সি: ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা
মাড়িকে শক্ত রাখে। এর অভাবে মাড়ি ফুলে যেতে পারে, রক্তপাত হতে পারে এবং সহজেই
সংক্রমিত হতে পারে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:
- লেবু
- কমলা
- পেঁপে
- ব্রকলি
- স্ট্রবেরি
ভিটামিন কে: ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এর অভাবে মাড়িতে
দীর্ঘস্থায়ী রক্তপাত হতে পারে। ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:
- পালং শাক
- ব্রকলি
- ব্রাসেলস স্প্রাউট
- শালগম
- অ্যাভোকাডো
ভিটামিন বি: ভিটামিন বি জিহ্বা ও মুখের ভেতরের টিস্যুর স্বাস্থ্যের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে জিহ্বা ফুলে যেতে পারে, মুখের কোণায় ফাটা দেখা দিতে পারে
এবং মাড়িতে প্রদাহ হতে পারে। ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:
- মাংস
- ডিম
- মাছ
- দুগ্ধজাত দ্রব্য
- শাকসবজি
ভিটামিন এ: ভিটামিন এ মুখের লালা নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর
অভাবে মুখ শুষ্ক হতে পারে, যা মাড়ির প্রদাহ ও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। ভিটামিন
এ সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:
- গাজর
- মিষ্টি আলু
- শাকসবজি
- ডিম
- মাছের তেল
অন্যান্য
- ফলিক অ্যাসিড: ফলিক অ্যাসিডের অভাবে মাড়িতে প্রদাহ হতে পারে।
- আয়রন: আয়রনের অভাবে মাড়িতে রক্তপাত হতে পারে।
- ক্যালসিয়াম: ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে মাড়ির হাড় দুর্বল হতে পারে।
দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর ঔষধ
আমরা অনেক সময় আমাদের দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ কিনে
থাকি। কিন্তু সবগুলো ওষুধ দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর জন্য কাজ না করতে পারে।
দাঁতের মাড়ি ফোলা কমানোর জন্য বেশ কিছু ঔষধ বাজারে পাওয়া যায়। তবে, কোন ঔষধ
ব্যবহার করবেন তা একজন দাঁতের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ঔষধ সেবন করা উচিত।
কিছু সাধারণ ঔষধ যা মাড়ির ফোলা ও ব্যথা কমাতে ব্যবহার করা হয়
- অ্যান্টিবায়োটিক: মাড়ির ইনফেকশনের কারণে ফোলা ও ব্যথা হলে অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ ব্যবহার করা হয়।
কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের নাম
- অ্যামোক্সিসিলিন
- ক্লাভুল্যানেট
- মেট্রোনিডাজোল
- সিপ্রোফ্লক্সাসিন
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ঔষধ: মাড়ির প্রদাহ ও ব্যথা কমাতে এই ঔষধ
ব্যবহার করা হয়।
কিছু অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ঔষধের নাম
- আইবুপ্রোফেন
- ন্যাপ্রোক্সেন
- ডেক্সামেথাসোন
অ্যানালজেসিক: মাড়ির ব্যথা কমাতে এই ঔষধ ব্যবহার করা হয়।
কিছু অ্যানালজেসিক ঔষধের নাম
- প্যারাসিটামল
- অ্যাসপিরিন
ঔষধ ব্যবহারের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় মাড়ির ফোলা ও ব্যথা কমাতে
সাহায্য করতে পারে
- নিয়মিত ব্রাশ ও ফ্লস করুন: দিনে দুবার, দুই মিনিট করে নরম ব্রিসেলযুক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন।
- লবণ জলে কুলকুচি: এক গ্লাস গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে দিনে কয়েকবার কুলকুচি করুন।
- হলুদ: হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ মাড়ির ফোলা ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরার জেল মাড়িতে লাগালে ফোলা ও ব্যথা কমে।
- বরফ: বরফের টুকরো কাপড়ে মুড়িয়ে মাড়িতে সেঁক দিলে ব্যথা কমবে।
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: ভিটামিন সি মাড়ির টিস্যু
মনে রাখবেন, দীর্ঘদিন ঔষধ সেবন করার পূর্বে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ
করুন।
দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় কেন
বর্তমান সময়ে দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়ার বিভিন্ন ধরনের কারণ রয়েছে। আর এ
কারণগুলো আমরা না জানার কারণে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা জনিত কারণ হতে পারে।
এমনকি দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়ার প্রধান কারণ কি এবং কেন হয় এ সমস্ত বিষয়বস্তু
সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে হলে নিজের তথ্যগুলো মনোযোগ সহকারে আপনাকে অনুসরণ করতে
হবে।
কিছু সাধারণ কারণ
- জিঞ্জিভাইটিস: এটি মাড়ির প্রদাহ, যা প্লাক জমা হওয়ার কারণে হয়। প্লাক হলো দাঁতের উপরে জমা হওয়া একটি আঠালো পদার্থ, যাতে ব্যাকটেরিয়া থাকে।
- পেরিওডন্টাইটিস: এটি জিঞ্জিভাইটিসের আরও উন্নত রূপ, যা মাড়ির হাড় ক্ষয় করতে পারে।
- মাড়িতে ইনফেকশন: ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকের সংক্রমণের কারণে মাড়িতে ফোলা ও ব্যথা হতে পারে।
- হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থা, মাসিক চক্র এবং রজোনিবৃত্তির সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাড়িতে ফোলা ও ব্যথা হতে পারে।
- অন্যান্য কারণ: ভিটামিন সি-এর অভাব, ধূমপান, ডায়াবেটিস, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদির কারণেও মাড়িতে ফোলা ও ব্যথা হতে পারে।
কিছু টিপস যা মাড়ি ফোলা রোধে সাহায্য করতে পারে
- নিয়মিত ব্রাশ ও ফ্লস করুন: দিনে দুবার, দুই মিনিট করে নরম ব্রিসেলযুক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন।
- নিয়মিত দাঁতের চেকআপ: প্রতি ছয় মাস পর পর দাঁতের ডাক্তারের কাছে চেকআপ করান।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান: ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খান।
- ধূমপান ত্যাগ করুন: ধূমপান মাড়ির টিস্যুকে দুর্বল করে।
- স্ট্রেস কমিয়ে আনুন: স্ট্রেস মাড়ির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
যদি আপনার মাড়ি ফুলে যায় বা ব্যথা হয়, তাহলে দ্রুত একজন দাঁতের ডাক্তারের সাথে
পরামর্শ করুন।
দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশন
দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশন একটি সাধারণ সমস্যা। এটি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, বা
ছত্রাকের সংক্রমণের কারণে হতে পারে।
মাড়িতে ইনফেকশনের লক্ষণগুলি
- মাড়ি ফোলা ও লাল
- মাড়িতে ব্যথা ও রক্তপাত
- মাড়ি থেকে পুঁজ বের হওয়া
- দাঁত নড়বড়ে হওয়া
- মুখের দুর্গন্ধ
মাড়িতে ইনফেকশনের কারণ
- প্লাক জমা: দাঁতের উপরে জমা হওয়া প্লাক জমা হলে তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মে মাড়িতে ইনফেকশন হতে পারে।
- হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থা, মাসিক চক্র, এবং রজোনিবৃত্তির সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাড়িতে ইনফেকশন হতে পারে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়া: ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, HIV/AIDS এর মতো রোগের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে মাড়িতে ইনফেকশন হতে পারে।
- অন্যান্য কারণ: ভিটামিন সি-এর অভাব, ধূমপান, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদির কারণেও মাড়িতে ইনফেকশন হতে পারে।
লেখকের শেষ মন্তব্যঃ দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায়
প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং দাঁতের
মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য জেনেছেন। আজকের
আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি দাঁতের মাড়ি ফোলা ও ব্যথা কমানোর উপায় সঠিক তথ্য পেয়ে
উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পরিচিতদের সাথে বেশি বেশি শেয়ার করবেন এবং
ভবিষ্যতে এ ধরনের স্বাস্থ্যসম্মত ও চিকিৎসা বিষয়ক তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি
ফলো করুন ধন্যবাদ।
এরোস বিডি ব্লগ ওয়েবসাইট নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url