তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে
মাসিকের কতদিন পর নামাজ পড়া যায়তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে আপনি কি এই বিষয় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন?
তাহলে আমাদের আজকের পোস্টটি আপনার জন্য।রাসুল সাঃ তারাবির নামাজ কত রাকাত আদায়
করতেন জানতে হলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃতারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে হলে, নিচের
তথ্যগুলো মনোযোগ সহকারে অনুসরণ করুন।
তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে
বর্তমান সময়ে অনেক মুসল্লিরা রয়েছে যারা রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়া বিষয়ে
সঠিক তথ্য তারা জানে না। তারা মনে করে যে রমজান মাসে তারাবির নামাজ না পড়লে
তাদের রোজা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। কিন্তু এ কথাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। কেননা
রমজান মাসে হ্যাঁ, তারাবির নামাজ না পড়লেও রোজা হবে। তবে তারাবির নামাজ ফরজ
নয়,
বরং এটি একটি নফল নামাজ। রমজান মাসে রাতের বেলায় জামাতে আদায় করা এই নামাজের
অনেক ফজিলত রয়েছে, তবে এটি না পড়লে রোজার কোন ক্ষতি হবে না। তাই আসুন আমরা সকলে
জেনে নেই তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে, কিনা এ বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে হলে
নিচের তথ্যগুলো মনোযোগ সহকারে অনুসরণ করুন।
তারাবির নামাজ না পড়লে কি কিছু হবে
- তারাবির নামাজের ফজিলত থেকে বঞ্চিত হবেন।
- রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত পালন করতে পারবেন না।
- আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
তারাবির নামাজ পড়তে না পারলে কি করবেন
- যদি অসুস্থতা, ক্লান্তি, অথবা অন্য কোন বৈধ কারণে তারাবির নামাজ পড়তে না পারেন, তাহলে আপনার কোন গুনাহ হবে না।
- বিকল্প হিসেবে, আপনি ঘরে বসে নফল নামাজ পড়তে পারেন।
- রমজান মাসের অন্যান্য ইবাদতের দিকে মনোযোগ দিতে পারেন, যেমন কোরআন তেলাওয়াত, দান-সদকা, দুঃস্থদের সাহায্য করা ইত্যাদি।
মনে রাখবেন
- তারাবির নামাজ না পড়লে রোজা ভঙ্গ হবে না।
- তবে, রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে তারাবির নামাজ পড়ার চেষ্টা করা উচিত।
- যদি কোন বৈধ কারণে তারাবির নামাজ পড়তে না পারেন, তাহলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন।
তারাবির নামাজ না পড়লে কি পাপ হবে
অনেক সময় দেখা যায় যে কোন ব্যক্তি যদি রোজা থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়ে
কিংবা শারীরিক দিক দিয়ে ক্লান্তি অনুভব করে। সে ক্ষেত্রে সে ব্যক্তি তারাবির
নামাজ না পড়লে তার রোজা হবে এবং কোন ধরনের পাপ হবে না। বরং আল্লাহর দরবারে তার
রোজাটি কবুল করা হবে।তারাবির নামাজ না পড়লে পাপ হবে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর
নির্ভর করে আপনার
অবস্থার উপর ভিত্তি করে। তাই আসুন আমরা সবাই জেনে নিই তারাবির নামাজ না পড়লে কি
পাপ হবে এই সমস্ত বিষয়ে সম্ভাব্য কিছু কারণ সমূহ নিম্নলিখিত অংশে বিস্তারিতভাবে
আলোচনা করা হলো। যে তথ্য গুলোর মাধ্যমে আপনারা সঠিক তথ্য পেয়ে তারাবির নামাজ না
পড়লে কি পাপ হবে কিনা এই বিষয়ে জানতে পারবেন।
যদি আপনি তারাবির নামাজ না পড়ার কারণ হয়
- অসুস্থতা, ক্লান্তি, অথবা অন্য কোন বৈধ কারণ, তাহলে আপনার কোন পাপ হবে না।
- জ্ঞান না থাকা, উদাসীনতা, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাওয়া, তাহলে আপনার পাপ হবে।
তারাবির নামাজের ফজিলত
- রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
- আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভের মাধ্যম।
- পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফের সুযোগ।
- জান্নাত লাভের সুযোগ।
তারাবির নামাজ পড়তে না পারলে করণীয়
- যদি কোন বৈধ কারণে তারাবির নামাজ পড়তে না পারেন, তাহলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন।
- বিকল্প হিসেবে, আপনি ঘরে বসে নফল নামাজ পড়তে পারেন।
- রমজান মাসের অন্যান্য ইবাদতের দিকে মনোযোগ দিতে পারেন, যেমন কোরআন তেলাওয়াত, দান-সদকা, দুঃস্থদের সাহায্য করা ইত্যাদি।
মনে রাখবেন
- তারাবির নামাজ ফরজ নয়, বরং এটি একটি নফল নামাজ।
- তবে, রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে তারাবির নামাজ পড়ার চেষ্টা করা উচিত।
- যদি কোন বৈধ কারণে তারাবির নামাজ পড়তে না পারেন, তাহলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন।
নামাজ আদায় না করলে কি রোজা হবে
নামাজ আদায় না করলে কোন অবস্থাতে কখনো রোজা হবে না। বরং রোজার জন্য নামাজ আদায়
করা ফরজ নয়। রোজার জন্য কয়েকটি শর্ত আপনাকে মনোযোগ সহকারে পালন করতে হবে। যে
শর্তগুলো কেবলমাত্র একজন মুসলিম ঈমানদার ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আর
এইশ র্ত হলো
- সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া
- বিচার-বিবেচনার জ্ঞান থাকা
- রমজান মাসের পূর্ণাঙ্গ দিন শুরু হওয়া
- সেহরি খাওয়া
- ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভাঙা থেকে বিরত থাকা
তবে, নামাজ না পড়লে রোজার পূর্ণ ফজিলত লাভ করা যাবে না। নামাজ হলো ইসলামের
দ্বিতীয় স্তম্ভ এবং রোজার সাথে নামাজ আদায় করলে রোজার পূর্ণতা লাভ করা যায়।
তারাবির নামাজের সাথে রোজার কি সম্পর্ক
বর্তমানে অনেক মুসলিম ঈমানদার ব্যক্তিগণ মনে করেন যে, তারাবির নামাজের সাথে রোজা
রাখার এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তবে তাদের এই চিন্তা ভাবনা গুলো কখনো সঠিক নয়।
কেননা তারাবির নামাজের সাথে রোজার সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই। কারণ রোজা হলো ইসলামের
পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি ফরজ ইবাদত, যেখানে রমজান মাসের পুরো
দিন ধরে ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া-দাওয়া ও সহবাস করা থেকে
বিরত থাকা হয়। অন্যদিকে, তারাবির নামাজ হলো রমজান মাসের রাতে জামাতে আদায় করা
একটি নফল (ঐচ্ছিক) ইবাদত। তাই আসুন আমরা সবাই জেনে নিই তারাবির নামাজের সাথে
রোজার কি কি সম্পর্ক রয়েছে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে হলে নিচের তথ্যগুলো মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।
তারাবির নামাজের সাথে রোজার সম্পর্ক
- ফজিলতঃ রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো তারাবির নামাজ। রোজার সাথে তারাবির নামাজ আদায় করলে রোজার পূর্ণ ফজিলত লাভ করা যায়।
- মাগফিরাতঃ রোজার সাথে তারাবির নামাজ আদায় করলে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
- সুন্নাহঃ রাসুল (সাঃ) রমজান মাসে তারাবির নামাজ আদায় করতেন এবং তার সাহাবীদেরও এটি আদায় করার নির্দেশ দিতেন।
তারাবির নামাজ না পড়লে
- রোজা ভঙ্গ হবে না।
- তবে রোজার পূর্ণ ফজিলত থেকে বঞ্চিত হবেন।
- আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
মুসলমানরা কেন তারাবির নামাজ পড়ে
অনেক মুসলমানরা রয়েছে যারা রমজান মাসে রোজা রাখার পরে রাতে তারাবির নামাজ পড়ার
আসল উদ্দেশ্য তারা জানে না। আবার অনেক মুসলিম ভাইয়েরা রয়েছে যারা তারাবির নামাজ
কিসের উদ্দেশ্য পড়া হয় বা কি জন্যে এই তারাবির নামাজ আদায় করতে হয় এই সমস্ত
বিষয়ে তারা সঠিকভাবে অবগত রয়েছে। তাই রমজান মাসে মুসলমানদের তারাবির নামাজ
পড়ার উদ্দেশ্যের কারণ সমূহ নিচে আলোচনা কর হল।
ফজিলত
- রাসুল (সাঃ) রমজান মাসে তারাবির নামাজ আদায় করতেন এবং তার সাহাবীদেরও এটি আদায় করার নির্দেশ দিতেন।
- হাদিসে বর্ণিত আছে যে, "যে ব্যক্তি ঈমান ও আশার সাথে রমজান মাসের তারাবির নামাজ পড়বে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফ করা হবে।" (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)
- তারাবির নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভ করা যায়।
- জান্নাত লাভের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
অন্যান্য কারণ
- রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
- রাতের বেলায় ঘুম থেকে উঠে আল্লাহর ইবাদত করার মাধ্যমে ঈমান ও তাকওয়া বৃদ্ধি পায়।
- মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধন স্থাপিত হয়।
রাসুল সাঃ তারাবির নামাজ কত রাকাত আদায় করতেন
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের জানাতে চাই যে, আমাদের রাসুল সাঃ তারাবির
নামাজ কত রাকাত আদায় করতেন এ বিষয় সম্পর্কে। অর্থাৎরাসুলুল্লাহ (সাঃ) কত রাকাত
তারাবির নামাজ আদায় করতেন তা নিয়ে বিভিন্ন হাদিসে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা রয়েছে।,
তবে কিছু সম্ভাব্য তথ্যগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। যে তথ্যগুলোর
মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমাদের রাসুল সাঃ তারাবির নামাজ কত রাকাত আদায়
করতেন। তাহলে চলুন আমরা জেনে আসি রাসুল সাঃ তারাবির নামাজ কত রাকাত আদায় করতেন।
কিছু হাদিস অনুসারে
৮ রাকাত
- আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: "রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজান মাসে ঘরে ১১ রাকাত নামাজ পড়তেন। তার মধ্যে ৮ রাকাত তারাবিহ এবং ৩ রাকাত বিতর।" (বুখারী ও মুসলিম)
১১ রাকাত
- আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত: "রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজান মাসে ১১ রাকাত নামাজ পড়তেন। তার মধ্যে ৮ রাকাত তারাবিহ এবং ৩ রাকাত বিতর।" (বুখারী ও মুসলিম)
১৩ রাকাত
- আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত: "রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজান মাসে ১৩ রাকাত নামাজ পড়তেন। তার মধ্যে ৮ রাকাত তারাবিহ এবং ৫ রাকাত বিতর।" (মুসলিম)
২০ রাকাত
- ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত: "রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজান মাসে ২০ রাকাত নামাজ পড়তেন। তার মধ্যে ৮ রাকাত তারাবিহ এবং ১২ রাকাত বিতর।" (আহমাদ)
উল্লেখ্য যে, উপরে উল্লেখিত হাদিসগুলো সহীহ হাদিস। তাই কোন নির্দিষ্ট সংখ্যাকেই
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কর্তৃক নির্ধারিত রাকাত সংখ্যা বলা যাবে না। বরং, রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংখ্যক রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করতেন।
মুসলিমদের জন্য করণীয়
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কর্তৃক নির্ধারিত কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা না থাকায়, মুসলিমরা
তাদের সুবিধা অনুযায়ী যেকোন সংখ্যক রাকাত (৮, ১১, ১৩, অথবা ২০) তারাবির নামাজ
আদায় করতে পারেন।
তবে, ৮ রাকাতের বেশি তারাবির নামাজ পড়লে, ওয়িতরের সাথে মিলিয়ে মোট রাকাত
সংখ্যা বিজোড় হওয়ার দিকে খেয়াল রাখা উচিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো,
নিয়মিত তারাবির নামাজ আদায় করা, তা যত রাকাতই হোক না কেন।
লেখকের শেষ মন্তব্যঃ তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে
প্রিয় পাঠকগণ আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন
এবং তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে এ বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে
অনেক কিছু জেনেছেন। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি তারাবির নামাজ না পড়লে কি
রোজা হবে এ বিষয়ে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে থাকেন তাহলে, আপনার পরিচিতজনদের সাথে
তাদের নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে এ বিষয়ে সম্পর্কে বেশি বেশি শেয়ার করবেন এবং
ভবিষ্যতে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটির ফলো করুন
ধন্যবাদ।
এরোস বিডি ব্লগ ওয়েবসাইট নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url